মাধবপুর (হবিগঞ্জ) ১৬ এপ্রিল : নাসিরনগরে সেপটিক ট্যাংকির মাচা খুলতে গিয়ে তিনজন নির্মাণ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। এর মধ্যে আলম মিয়া একজন। বারার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন তিনি। বেচে নেয় নির্মাণ শ্রমিকের কাজ। শনিবার সকালে আলম জীবিকার তাগিদে পার্শ্ববর্তী নাসিরনগর উপজেলার গুনিয়ক ইউনিয়নের গুটমা বাজারের পাশে আহাদ আলীর স্বপ্না মার্কেটের সেপটিক ট্যাংকের কাঠের মাচাল খুলতে সেপটিক ট্যাংকের ভিতরে প্রবেশ করেন মোঃ আলমসহ আরো দুইজন। পরে তাদের কোনো শব্দ না পেয়ে স্থানীয়রা গিয়ে দেখতে পান সবাই ভেতরে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন।
পরে ফায়ার সার্ভিস পুলিশের সহযোগিতায় ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মোঃ আলম মিয়া এক বছর আগে বিয়ে করেন উপজেলার মাঝি সাইল গ্রামে। এখন আলমের স্ত্রী ছয় মাসের অন্তঃসত্তা। অভাব অনটনের মধ্যে তাদের সংসার ছিল আনন্দে। অন্তসত্বা স্ত্রী ও মায়ের জন্য কিনে দেন নতুন কাপড়। ঈদের আনন্দ শেষ হতে না হতেই পরিবারের নেমে এসেছে বিষদের ছায়া। স্বামী অসময়ে চলে যাওয়া কোন ভাবেই মানতে পারছের না স্ত্রী। রোববার রাতে যখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে আলমের লাশ মাধবপুর পৌরশহরের কৃষ্ণনগর গ্রামে বাড়ি পৌছে। অন্তসত্বা স্ত্রী ও তার মার আহাজারিতে এক হৃদয় বিদায়ক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তাদের আহাজারি ও বিলাপে গ্রামবাসী ও চোখে পানি ধরে রাখতে পারেনি।
স্বামীকে হারিয়ে স্ত্রী বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন, চিৎকার করে বলেন স্বামীর কি হল, আমার সন্তানের কি হবে, আপনারা আমার স্বামীকে এনে দেন। অনাগত সন্তানের চিন্তায় পাগল প্রায়।
অন্য নিহতরা হলেন উপজেলার আদাঐর ইউনিয়নের সম্পদপুর গ্রামের মোঃ নজব আলী ছেলে চনু মিয়া (২২), মৌজপুর গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে সম্রাট মিয়া (২৩)। রোববার রাতেই তিন নির্মান শ্রমিকের দাফন সম্পন্ন হয়। কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা আদাঐর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ফারুক পাঠান বলেন, তিনটি পরিবারের উপার্জনক্ষম তিন জন মানুষ অকালে মর্মান্তিক মৃত্যুতে পরিবার গুলো অসহায় এখন। তাদের পাশে সরকার ও বিত্তশালীদের দাড়ানো প্রয়োজন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan